Tuesday, April 22, 2008

The Competitive Edge

Even few years ago, West Bengal Higher Secondary Board students had a lot to complain. First, their syllabus was much shorter that the Central curriculum, on which most national-level competitive exams are based, like IITJEE, AIEEE, etc; they had to cover many additional topics. Secondly, there were date clashes between local and national exams – e.g. I had to choose between ISI & AIEEE.
That scenario improved by two means. After repeated petitions from students, the authorities sat and decided to schedule exams better. Also, for WBJEE, students from other states were sanctioned against, probably by forcing to sit for exam from WB only.
That move saw some amusing aftermath – many seats in many engineering colleges remained vacant, and huge hue and cry by left-out students lead to rethinking by 'greatheads' who had to dish out some relaxations in cut-off.
This funny shuffle and reshuffle in admission strategy had another partner – the question pattern underwent a similar roller-coaster ride. First it was a set of problems, with higher emphasis on particular subjects. Then those relinquished the special status in the land of democracy. Soon, the problems were replaced by MCQ (multiple choice questions), with negative marking probably. Usual complaints associated with MCQ started to flow, and small problems were introduced back.
Mind you, all these you can enjoy only if you are perched in a safe nest high above the madding crowd of 'aspirants'.

I've heard so many voices of unrest, saying "Did you see that boy? He always fared below me, and got a JEE rank much lower too. But curse his SC/ST/OBC status – it has catapulted that brat to a high place which he is boasting off now, obviously suppressing the caste tag." Pardon, I am not addressing that sensitive issue now. But caste is an issue indeed in India. Give it some thought when you are free, and raise storm over teacups. Or sign an (online) petition, in favour or against. We rarely do things larger than this.

Now WB boards and exams are reforming the syllabus too, and introducing admirable changes. Thumbs up to them (oh no, not Thums Up, the soft drink – our ubiquitous health Minister Mr. Ramadoss does not encourage endorsing junk food).

This year the JEE exam was scheduled on a single Sunday. My cousin came from Delhi to sit for it. The next Sunday follows AIEEE, a biggie for central board students. But all his precious time spent over JEE will probably be futile. He just got the news of WBJEE question paper leak on Saturday, followed by the natural phenomenon of exam postponement till unknown. He may not know, but such things are common in WB universities, aren't?
He would have wanted to flee to his home quickly. But there comes our omnipresent opponent political power into picture. Their lady leader, Mamata (affection – the name being a bad pun on her nature – her affection for affliction to common people) – called a Bandh (strike) – another natural phenomenon in WB, on Monday, which was his scheduled departure day. Enduring monetary loss, he had rescheduled the journey on Tuesday. Now he is reluctant to spend more and get an instant ticket for Sunday.
I can offer little condolence to him, who was already fuming over this sweaty hot summer of Kolkata. Now I didn't dare visit him – who knows if he is boiling. As the JEE authorities themselves have admitted, after failing to send admit cards to some students, that there might not be a JEE this year, because all other Sundays are booked by other competitive exams, and there is a Court order to finish within 3 months of Board exam, the deadline drawing closer.

The drama does not end here. As the gang had admitted, over the past few years they have sold WBJEE questions to students. So start grabbing all WBJEE passers, and put them to trial to check if a cheque to the racket boosted them. But leave me alone – I didn't pursue an Engineering career. Best of luck in your investigations. And best of luck to the aspirants. Bye.

Monday, April 21, 2008

Chikitsa Bibhrat

“বসবার জায়গা আছে।”
হ্যাঁ, প্লিজ বসুন, যদি দয়া করে আমার এই গল্প শুনতে এসে থাকেন। সাধারণত, ব্লগে গল্প লেখা হয়না। তবু লিখছি। কেন, পড়লে হয়ত বুঝবেন:


আমি একজন ছাত্র। কলেজে পড়ি। হস্টেলে থাকিনা যদিও, তবুও প্রায়ই যাই। হয় treat থাকলে, নয়ত ডাউনলোড করা কোন সিনেমা নেবার হলে। বন্ধুরা বলে, আমার রুচি নাকি খুব খারাপ, শুধু আল ফাল “আপনা সপনা মানি মানি” মার্কা ফিলিম ছাড়া আর কিছু দেখিনা। কি করব বলুন, সব জিনিস তো সবার ধাতে সয় না। যে ক্লাসিকাল সঙ্গীত শুনলে মনে হয় কেউ কায়দা করে গার্গল করছে, তা শুনে কেন ভাল লাগবে বলুন দিকি। যাক সে, এটা কিন্তু ঠিক যে আমি ভাল অভিনেতা। বিষেশত হিরো। (ওহ্‌, বানান দেখে চমকে উঠলেন বুঝি? ও আমার একটু-আধটু অমন হয়ে যায়।) অবশ্য দেবানন্দ মার্কা নয়, ঋত্বিক মার্কা। যদিও দেবানন্দ শাহরুখ অমিতাভ সকলের ভালই নকল নামাই। কবে থেকে শখ, নিজে পরিচালক হয়ে এমন একটা সিনেমা বানাবো, নিজের হিরোত্ব পুরো unleash করে দেব। অন্যের শাসনে থেকে অভিনয়ে সুখ নেই। একটু মনপসন্দ কায়দা-কেতা (নিন্দুকে বলে ছ্যাবলামো) করা যায় না। তাই এবার হস্টেলের নাটকের অনুষ্ঠান “স্পটলাইট”-এর কথা শুনতেই মনে হল, এ-ই সেই, শেষ সুযোগ। ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র, আর তো হবেনা। ঠিক করলাম, যত বড় বড় হিরো আছে দুনিয়ার, সবার থেকে নিয়ে একটা কিছু নামাতে হবে। ডন, কৃশ, সুপারম্যান, শোলে, হ্যারি পটার, রেস, গোলমাল (নতুনটা, অবশ্যই), মুন্নাভাই, এইরকম সব মিলিয়ে। শুনে বন্ধুরা অনেক হ্যাটা দিল। “বলিস, এখন বার্ড ফ্লুর এত ছড়াছড়ি, কেউ দয়া করে (পচা) ডিম ছুঁড়বেন না”; “একটা ডালির ব্যবস্থা করিস, পুজোর অঞ্জলির মত, যারা যারা জুতো ছুঁড়তে চাইবে তারা যেন আলাদা করে না ছুঁড়ে ঝামেলা না বানায়, ডালি সবার কাছে যাবে, তাতে দিয়ে দেয়, আমরা ছুঁড়ে দেব”; “অনুরোধ করিস, কেউ একপাটি ছুঁড়বেন না, আপনাদেরও লাভ হয় না, আমাদেরও না, দিলে দুপাটি-ই দেবেন” এইসব। আরে, তোরা কি এসবের মর্ম বুঝবি? তাহলে তো তোরাই হিরো হয়ে যেতি রে। রোজ রাত্রে যে তিনটে করে আমেরিকান পাই দেখে ছটায় শুতে গেছি, সে কি আর এমনি এমনি? Film awareness নইলে আসবে কি করে?
“খোশনবীসপুত্র একখানি নাটকের সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখিয়াছেন বটে; নায়িকার নাম চন্দ্রকলা কি শশিরম্ভা ... – তাঁহার পিতা বিজয়পুরের রাজা ভীমসিংহ, আর নায়ক একটা কিছু সিংহ; এবং শেষ অঙ্কে শশিরম্ভা নায়কের বুকে ছুরি মারিয়া আপনি হা হতোস্মি করিয়া পুড়িয়া মরিবেন, এই সকল স্থির করিয়াছেন। কিন্তু নাটকের আদ্য ও মধ্যভাগ কি প্রকার হইবে, এবং অন্যান্য নাটকোল্লিখিত ব্যক্তিগণ কিরূপ করিবেন, তাহা কিছুই স্থির করিতে পারেন নাই। ... শেষে একটি গীতও দিয়াছেন – নায়িকা ছুরি হস্তে করিয়া গায়িতেছে; কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে নাটকের অন্যান্য অংশ কিছুই লেখা হয় নাই।”
আমার অবস্থাও ঠিক এরকম হল – আইডিয়া কিছুতেই প্লটে কনভার্ট হল না। তাই দেখে কৌশিক, আমার ক্লাসমেট, একদিন ঐটা ‘কমলাকান্তের পত্র’ থেকে শোনাল, যে “দ্যাখ জগু, দিন তো এসে গেল, এখনো এইভাবে বসে থাকলে শেষে কিছুই নামবে না।” ধনঞ্জয়, আরেক বন্ধু, ও তাই বলল। শেষে দেখি, যা ভয় করেছিলাম তাই, এরা দুজনে সব পুরনো বাংলা গল্প-নাটক নিয়ে বসে পড়েছে। একটা করে বলে, একটু করে অ্যাক্টো করে, আর আমাকে জিজ্ঞেস করে। আমি কি বুঝবো? আমার কাছে তো সবই সমান, সবই পচা। এটা অনেকেই বলেছিল, আমিও চেয়েছিলাম, যে কমেডি হোক, লোকে মজাও বেশি পাবে, আর সিরিয়াস অ্যাক্টিং আমাদের দিয়ে হবেও না – কারন আমার পণ ছিল যারা কোনদিন আগের হোস্টেল নাটকগুলোয় নামেনি তাদের দিয়েই করাব – যদিও মহত্ব দেখাচ্ছিলাম তবুও আসল কারন এই যে ভাল অ্যাক্টররা আমায় বিশেষ কলকে দিত না। শেষ মেশ মনোজ মিত্রের একটা লেখা, ভীম বধ, আর চিকিৎসা সঙ্কট এর মধ্যে আমি choose করলাম লাস্টেরটা। আমার সাজানো পেল্যান শুকিয়ে গেল, কিন্তু কি আর করা।
ভেবেছিলাম হিরোর রোলটা নেবো, তবে পরিচালনার সঙ্গে মেন রোল করা একটু চাপ বলে, আর একটু ভদ্রতা/সঙ্কোচ বশত, একটু বিনয় করছিলাম। ওমা, দেখি তক্ষুনি ধনা আমাদের ব্যাচের অন্য একজনকে কাস্ট করে দিল! আমার ভাগ্যে জুটল শুধু ষষ্ঠীবুড়োর রোল। কৌশিক পাজিটাকে মধু চাকরের রোলে দিয়ে অবশ্য একটু মনের জ্বালা মেটালাম। চাকরের রোল কেউ করতে চায়না – গত দুবার নাটকে (যখন আমি দর্শক) যে-ই চাকরের রোল পেয়েছে, শেষ দিন বাড়ি পালিয়ে গিয়ে অন্যদের সমস্যায় ফেলেছে। অবশ্য এবার ও এমন ভাবে জড়িয়ে ছিল যে পালাতে পারবেনা, এই আশায় ছিলাম। পালায়ও নি।
আমাদের ব্যাচের মাইয়াগুলান কেউ রাজি হল না। শেষে হস্টেলাররাই একজন রিসার্চ ফেলো দিদি (বিপুলা), আর একজন অন্য ব্যাচের মেয়ে (পিসিমা) কে ধরে আনল। দ্বিতীয় জনের অভিনয় রিডিং এর থেকে বেশি আর ওঠে না। কি চাপ। অন্য কাস্টিং মোটামুটি হয়ে গেল। তার পর হল মহা ঝামেলা। বঙ্কু পয়লা বৈশাখ এর জন্য একহপ্তা মামাবাড়ি যাবে, নো প্রাক্টিস, পদত্যাগ। নিধু মুম্বাই তে চাকরির ইন্টারভিউ খারাপ দিয়ে, মনের দুঃখে রোল করবেনা বলে বাড়ি চলে গেল। পিসিমা’র ঘরে জানলা দিয়ে চুরি হলে সেও বাড়ি পালাল। নন্দ, মেন রোল, সেও বন্ধুদের প্যাঁক খেয়ে রিজাইন করল। তাকে substitute করা হল, কিন্তু নতুন ছেলেটি সেই meek ভাবটা আনতেই পারেনা। নন্দ মেলেনা, পিসিমাও না। এদিকে পুরনো দিনের গল্পের সাথে মেলান পুরোন মেজাজ, হাবভাব আনতে পারিনা, ডিরেকশন দেব কি? মনের দুঃখে:

আমার স্ক্রিপ্ট না নামিল,
ট্রেনিংও ঝুলিল,
দিন যে আসিয়া যায় মা।
স্পটলাইটেতে কি যে নামাব
বুঝতে পারিনা হায় মা।

ধনা-টার চাপে স্টোরি তো ভুলেছি,
রোলটাও বড় বিশ্রী পেয়েছি;
কৌ’ পাজি করে বড় সর্দারি,
আর না সহ্য হয় মা।

কাস্টিঙে দেখি ঝামেলা তো ভারি,
সেট, মেকাপেও বড় বাড়াবাড়ি;
একটু ঢোকাতে চাই ছ্যাবলামো,
সেই সুযোগও না পাই মা।

ছেলেগুলো অ্যাক্টিং তো জানেনা
ডায়লগও মনে রাখতে পারেনা–
যেথা নেই পচা ডিম বা টমেটো
সেথা যেতে প্রাণ চায় মা।

লোকজন বলল, এরকম তো হবেই। সবাই নতুন অ্যাক্টর, অভিজ্ঞতা নেই, দক্ষতা নেই, সাহস ও নেই। আর ওদিকে কৌশিক আর ধনঞ্জয় বড় পারফেকশনিস্ট, খুব খুঁতখুঁত করে। কাস্টের ঠিক নেই, কৌশিক ছোঁড়া হঁকো, গড়গড়া, রঙ্গিন দাড়ি, ডাক্তারদের পোস্টার, হাকিমের টুপি সব বানিয়ে ফেলল। যদিও ভাল বানায়, তবুও, স্বীকার করতে আছে, বলুন? লাই পেয়ে যাবে না?
হাকিমের আলখাল্লা জোগাড় করতে গেলাম কলেজের অফিসে, সমাবর্তন (বাপরে) এর জোব্বা চাইতে। শুনলাম, সদ্য কাচতে দেওয়া হয়েছে, মেরামত হবে, তবে আসবে। আমাদের পাঁশুটে মুখ দেখে ওরাই বলল, বিদেশি স্টুডেন্টদের অফিসে যাও, ওদেরও একসেট থাকে। গেলাম, চাইলাম। বলল, কি করবে? যেই শুনল, হাকিমের পোষাক, আমায় বকে দিল। না, হাকিমের জন্য কেউ রংচঙে ড্রেস দেয়? কালো কোট চাই। তখুনি এক জন উকিল বন্ধুকে ফোন করে তার কাছ থেকে চাইল, বলল পরের দিন এসে নিয়ে যেও। কৌশিক শুনে পরে বলে কি, ওটা ওরা বিচারক হাকিম ভেবেছে, চিকিৎসক হাকিম নয়। কি গেরো! এই জন্যেই এইসব পুরোন জিনিস করতে চাইনা। যাহোক, গিয়ে আবার বললাম, এবার ঠিক করে।
আমার ডাস্টবিন-প্রীতি আছে, অনেকে জানে। ভাগ্যক্রমে হবৌ (হবু+বৌ) বিশ্বাস করে না। সেই রাজধানী এক্সপ্রেসে খেতে-ভুলে-যাওয়া সিঙ্গাড়াটা তুলে আনতে যে সাফাইকর্মীর পিছনে ছুটেছিলাম, জানেনা হয়ত। এবারও, মোহর বানাতে কৌশিক কিছু সোনালি কাগজ কিনে আনতে বলেছিল। কাটালাম। তার বদলে, হোস্টেলের ডাস্টবিন ঘেঁটে বার করলাম অনেকগুলো সিগ্রেটের প্যাকেট, তার সোনালি রাংতা দিয়েই বানানো হল।

লোকজন মনের সুখে বান্ধবী, বাড়ি সবেতে সময় দেয়, কিন্তু রিহার্সালে ফাঁকি। অরিজিৎ আগে মুখে না না করছিল, কিন্তু এত লোক, এত মেয়ে দেখে শেষে একটু ছদ্ম গাঁইগুঁই করে বঙ্কু করতে রাজি হয়ে গেল। ওদিকে দিন এসে গেল। বিপুলাদি এক দিদি কে ধরে এনেছিল, সে বলল ইমেলে স্ক্রিপ্ট পাঠাতে। টেনশনে ভুল করে আমি অমিতার বদলে অনিতা লিখে মেল করে দিয়েছি। পিসিমা আগের দিন বিকেলে ফোন করে বলল, কিরে, আমায় লাগবে না তো? তখন রহস্য উদ্ঘাটন হল। ভাগ্যিস পিসিমা দারুন অ্যাক্টর, তাই বেঁচে গেলাম। কিন্তু রাত হয়ে যাওয়ায় মধুর সঙ্গে তার কোন রিহার্সালই হল না। এ নিয়ে পরে মুশকিল হয়েছিল, পরে বলব।
আগের দিনও নিধু পাইনা, হকার পাইনা। হকার লাগবে, কারন, ট্রাম থেকে পড়া তো আর দেখাতে পারি না, পড়ার যুতসই কারন চাই। কৌশিক বলল, একটা মাতাল রাখিস, নন্দ পড়ে গেলে মাতালই বলবে, এ ব্যাটা মাতাল। আর আমি ভেবেছিলাম, স্টেজে সাইকেল তুলব, চালক কেতরে কেতরে যাবে ওটায় চড়ে। তারপর হকার, নন্দ, মাতাল, সাইকেল একসাথে ধাক্কা। টিপিক্যাল ‘হেরা ফেরি’ প্লট। অনেকে বারন করল। বলল, এরম কর, নন্দ বঙ্কুকে ডাকতে গিয়ে হকারের মাল পাড়িয়ে দেবে, সে ঠেলে দেবে, তখন মাতালের সাথে ধাক্কা হবে। মনোকষ্টে রাজি হলাম। আমি যেন ডাইরেক্টরই নই, যে যা পাচ্ছে মত চালাচ্ছে। আরে, হস্টেলের ছেলেরা কি পছন্দ করে আমি জানি, ওখান থেকেই তো আমেরিকান পাই পাই। শুনল না, বলে এই বয়সে আর স্ল্যাপস্টিক কমেডি করতে ইচ্ছা করেনা। সেটা কি, কে জানে।

লোকেদের চাপে শেষ দিন সকালে আমাদের ব্যাচের বাঘ অ্যাক্টরদের ধরতেই হল। রাজিও হয়ে গেল। নিধে আর হকার। নিধের একটা গান লেখা হয়েছিল। বেজিং থেকে সেটা লিখে পাঠিয়েছিলেন লন্ডনবাসী এক দাদা যাঁর আগে দিল্লিতে ব্যাণ্ড ছিল। সেটা নিধে একটু অন্য সুরে, অল্প কথা বদলে খাসা তুলে ফেলল।
মেকাপও প্রায় হয়ে এল। আমি নেহাৎ নিজের শাল আনতে ভুলে গেছিলাম, তাই শুধু মাঙ্কিক্যাপ পরেছিলাম। আচ্ছা, এত কিছু একসাথে করা যায়? এটা ভিডিও শুট হয়, যদিও ক্যামেরাম্যান খুব বাজে। গত বার, স্টেজের দু হাফে আলেকজান্ডার আর পুরু, ক্যামেরা শুধু পুরুর উপর। আলেক্স-এর চুল খোলা ওঠেইনি। কৌশিক কে বললাম, তোর তো মাত্র দুটো সিন, তুই-ই ক্যামেরা টা দেখিস। ও বলল, আমাকে তো সেট সাজাতেই হবে, আমারি হাতে বানানো প্রপ্‌ সব। বললাম, সে অনেক লোক আছে, যদিও আসলে কাউকেই পাই নি। তার সাথে বলেছিলাম, লাইট আর মিউসিকটাও তুই একটু সামলে দিস। পারলনা, জানেন! কিরকম ফাঁকিবাজ বলুন দেখি! যদিও সিন-বাই-সিন মিউসিক ইনস্ট্রাকশন সব লিখে ল্যাপটপ অপারেটর (রেকর্ডের সানাই বা ইসলামি মিউসিকের জন্য) আর কীবোর্ড বাদক এর জন্য ও দিয়েছিল, আমি একটা হারিয়ে ফেলি। দুজনকে একটা দিয়েই চালাতে হয়। আচ্ছা দেখুন, হাকিমের সিনে “খাজা মেরে খাজা” বাজালে পাবলিক হাসত না? বলল যে, একে ডাক্তার তায় ফ্রড, ধার্মিক হতে পারে না, বাজাস না। মানে নাই বা হল, লোকে হাসানোই তো উদ্দেশ্য। মূর্খ!

শেষ দিকে নন্দ বিপুলা মল্লিকের চেম্বারে যাবে, তারপর দুজনের দুজনকে পছন্দ হবে, তারপর বিয়ে; তবে আড্ডাটা উঠে যাবে। বিয়ে দেখানো ঝামেলা বলে স্ক্রিপ্টে ঠিক হল, প্রথমবার নন্দ উঠে আসার পর ‘সফট্‌ লাইট’ হবে, বার দুয়েক নন্দ যাতায়াত করবে, শেষে দুজনে হাত ধরবে, আর সানাই বেজে উঠবে। লাস্ট সিনে লোকজন খেয়ে বেরিয়ে আসতে আসতে বলবে, আমাদের আড্ডাটা ঘুচল। কৌশিক স্ক্রিপ্ট লিখেছিল, আমাদের থেকে input নিয়ে, ওকে জিগাইলাম, সফট্‌ লাইট মানে তুই কি বলছিস। মানল, হ্যাঁ, ওটা clearly লেখা হয়নি, ওখানে কোন রঙিন আলো দিয়ে দিস।
বিপুলাদি দারুন অভিনয় করে, তায় আবার এ বিষয়ে জ্ঞানও আচ্ছে – বলল, এক কাজ কর, প্রথমবার নন্দ হাতে প্রেসক্রিপশন নিয়ে যাবে, আর ফেরত দিয়ে দেবে, কারন ওকে দেখেই তো সব অসুখ চলে গেছে। আর দ্বিতীয়বার গোলাপ নিয়ে যাবে, গোলাপের উপর দুজনে হাত ধরবে। খাসা প্ল্যান। আবার একটা গানও বলল, যার দুটো line দুবার যাতায়াতের জন্য খুব appropriate:
“কেটেছে একেলা বিরহের বেলা, আকাশ কুসুম চয়নে,
সব পথ এসে মিলে গেল শেষে, তোমারি দুখানি নয়নে।”
গানের শেষে আরো দুবার নয়নে বলা আছে, সেই অনুযায়ী অভিনয় synchronize করা হল। আমি কৌশিককে বললাম, গানটা আর সানাইটা জুড়ে দে, ল্যাপু অপারেটর যদি পরপর প্লে করতে না পারে। গাঁইগুঁই করছিল, তবু করে দিল। লাল গোলাপ কিনে আনা হয়েছিল, দিব্যি practice হল, কিন্তু কয়েক ঘন্টা পর স্টেজে নামতে গিয়ে দেখি সে গোলাপ নেতিয়ে গেছে, জলে রাখা হয়নি বলে। যাচ্চলে। ওটা ছাড়াই করা স্থির হল।
আমি আর কৌশিক হাকিম, মীরমুন্সী, বল্‌বর আর নন্দকে practice করিয়ে খেতে গেছিলাম। এসে দেখি ওরা সিন চেঞ্জ করে ফেলেছে! নন্দ সেই শান্ত ভীতু ভাবে “রোগটা কি, সেটা জানতেই তো আসা বাপু” ছেড়ে উদ্ধত রাগত বিরক্ত ভাবে বলছে, “আরে, রোগটা জানলে কি এখানে আসতাম নাকি?” হাকিমও, নন্দ “বন্দেগি জনাব” বলার বা নজরানা দেবার আগেই “খামোশ” বলে চিৎকার করে উঠছে। শেষে মাথা কামাবার বদলে সবাই নন্দকে ধরে ঠ্যাঙ্গাচ্ছে; নন্দ বলছে, “ছেড়ে দাও, বল কত টাকা চাও”; এর মাঝে মীরমুন্সী আবার ষষ্ঠীবুড়োর লাঠিটা বাগিয়েছে, তাই দিয়ে নন্দর ঠ্যাং টানা হচ্ছে। কৌশিক দেখেশুনে বেশ খেপে গেল। আমায় বলছে, ডাইরেক্টর, কিছু বলো এদের। কি বলব, আমার তো বেশ মজাই লাগছে, এত দিন যে ভাটের আশায় ছিলাম, প্রথমবার তা দেখতে পাচ্ছি। আবার কৌশিকের ভয়ে বলতেও পারছি না, যে এটাই হোক। সে-ই অনেক ঝগড়া করে ওই পরিবর্তিত সিন বাদ দেওয়াল। আমরা পাঁচ জনেই বেশ দুঃখিত হলাম। হাকিম তো গোড়া থেকেই বলছিল, “কুছ্‌ অরিজিনালটি লাও ইয়ার। উও ভুলভুলাইয়া জ্যায়সা স্যাফ্রন পহ্‌না রোল দো মেরা।” তাতেও কৌশিকের আপত্তি – “অন্য একটা সিনেমা থেকে ডিরেক্টলি একটা রোল কপি করে আনা কি করে অরিজিনালটি হবে?”
তবে তার জমকালো প্রপ্‌স্‌ – টুপি, লাল ভেলভেটের আলখাল্লা, সাদা-লাল-নীল তিনরঙা দাড়ি, তারা কাটা পেতলের আতরদান, আর চমকদার গড়গড়া দেখে হাকিম খুশি হয়ে গেল। গড়গড়াটা কাগজ আর প্লাস্টিক দিয়ে বানানো, হাওয়ায় পড়ে যাচ্ছিল বলে বালি ভরে ভারি করে টেস্ট করতে গিয়ে কৌশিক ভুলে কখন সত্যি টেনে ফেলেছে, মুখে বালি ঢুকে কেশে অস্থির।

হকার তার প্রথম রিহার্সাল দিতে আসে এক নাটকের এক ঘন্টা আগে। তখন খবর শুনে আক্কেল গুড়ুম – আমাদের দ্বিতীয় মাড়োয়ারী তখনও বাড়ী থেকে বেরোয়নি – আর সে না এলে নন্দপতন সিনে ডায়লগের flow ঘেঁটে যাচ্ছে। তবুও তার মধ্যেই শুধু পড়াটুকু practice হল। হকার রিহার্সাল দিতে বসেছিল জুতোর ঢিপির পাশে, তাই ঠিক হল সে জুতোই বেচবে। রিহার্সাল হয়ে গেল, এরপর স্টেজে উঠে হল মুশকিল। দ্বিতীয় মাড়োয়ারী এসেছে নাটক শুরুর ঠিক আগে। এসে ব্যাপারটা শুনে নিয়েই স্টেজে উঠে গেছে। সেখানে হকারের সঙ্গে বড় আলোচনা জুড়ে দিয়েছে – কোন জুতো কেমন, সস্তা কত, নতুন না সেকেন্ডহ্যান্ড এসব। হকারেরও খেয়াল নেই, কথা চালিয়ে যাচ্ছে। আর এদিকে নন্দ বিছানো জুতোর উপর উঠে পড়েছে, হকার আর ক্রেতার গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে; একবার অডিয়েন্স, একবার হকার, একবার মাতাল, আর একবার আমার দিকে চায়; কিন্তু হকার আর ঠেলা দেয়না, বেচায় ভীষন ব্যস্ত। আমরা ইশারা করছি, ওরে ঠেল, ঠেল, হকার শোনে না। মাতাল খানিক দূরে দাঁড়িয়ে লটরচটর করছে, নন্দ ঠেলা খেলেই তো সে ছুটে আসবে ধাক্কা দিতে, নইলে পড়বে কেন। এমন সময় হঠাৎ হকারের হুঁশ হলে, “এই, হ্যাঁ, সরে যান”, বলে ঠেলে দিল। মাতাল তাড়াতাড়ি ছুটে আসতে গেল, পুরোটা পারলনা, নন্দ খানিকটা এমনি এমনি গোঁজামিল দিয়ে পড়ে গেল।
এমন চমৎকার উদ্বোধনের ধারা বোধহয় পরের সিনেও continue করছিল। চিত্রশিল্পী (বন্ধুর বাবা)-র পরামর্শ অনুযায়ী নন্দর বাবা’র ছবি লাগানো হয়েছিল পিন দিয়ে, পেছনের কাপড়ে। লাগাতে না লাগাতেই হাওয়ায় ঠপাস করে খুলে পড়ে গেল। ভাগ্যিস তখনো আলো জ্বলেনি। সেলোটেপ দিয়ে লাগানো হল (আর্ট ডিরেক্টরের নাকি কাঁচি হাপিস, দাঁত দিয়ে কাটতে হল)। এরপর সিনে, পিসিমা “কাশী টেনে নাও ঠাকুর” বলে পিছন ফিরেছে, মধু এসে ডেকেছে, “পিসিমা, চিনি চাই”। কৌশিক নাকি স্ক্রিপ্ট হারিয়ে ফেলায় পিসিমার কোন ডায়লগের পর উঠবে ধরতে পারেনি, ভুল সময়ে উঠে পড়ে থতমত খেয়ে গেছিল, সুন্দর continue করা লাইন “ঠাকুর চিনি চাইছে পিসিমা” না বলে ওটা বলে ফেলেছে। ছোঁড়া আরও ভেবলে গেল, যখন দেখে পিসিমা ফিরে ডায়লগ বলছে না। আবার চেঁচাল, “পিসিমা”, তবুও সাড়া পায় না। পরে বলল যে, তখন নাকি লাইন চেঞ্জ করে বলতে যাচ্ছিল, “পিসিমা, অনেক তো বয়স হল, এবার কানের যন্তর কিনুন।” তখনই পিসিমাকে ফিরতে দেখে চেপে গিয়ে আসল ডায়লগ বলেছে। নন্দরা গোপনে পরামর্শ করেছিল, কিছু অরিজিনালিটি ওরা ঢোকাবে অনস্টেজ, যেমন মধুকে হ্যাটা দেওয়া ইত্যাদি। শুরু থেকেই এমন কীর্তি হতে থাকায় আর পারেনি।

বাঙাল বেটা রোল করতে হবে শুনেই বাড়ি পালিয়ে গেল। কোবরেজ যে করছিল সে পাক্কা ঘটি। তার উচ্চারন অনেক কষ্টে কিছু দুরুস্ত্‌ হলেও অভিনয় ভালো ছিল না। আর “দেখ দেখ বিড়েলে সবটা ছাগলাদ্য ঘৃত খেয়ে গেল” এর বদলে খালি “দেখ দেখ ছাগলে সবটা... উম... ইস্‌” করছিল। স্টেজে যদিও তা করেনি, তবে দৌড়ালো ঠিক পেছন দিকে, গল্পের ঠিক উলটো, যেখানে বিড়াল থাকলে ও দেখতেই পাবেনা।
আসল মজা জমল, আর আমরা মজলাম, হাকিম এর সিনে। সিন করতে গিয়ে দেখি মোহর আর রুমাল নেই। ছেলেরা ছুটল আমাদের তালা দেওয়া উপরের তলার রুমে খুঁজতে। ততক্ষন আমরা লাইট নিভিয়ে দাঁড়িয়ে। মিউজিসিয়ানকে বললাম তুই বাজিয়ে যা। ওরা ফিরে এসে বলল, পেলাম না। এদিকে হাকিম চেয়ারে বসে পড়েছে, নড়েনা। বলে, একজন হাকিম, মাটিতে বসব! তাকে বসিয়ে সিন চালু হল। দেখি, মীরমুন্সী ডায়লগ বলছে, “আইয়ে বাবুসাব, কি বেমারি বোলেন, চটাস্‌।” মানে চড় নন্দের গালে না, নিজের গালে, বোঁ করে ঘুরে গিয়ে। দাড়ি চেপে ধরতে গালের, দর্শকের আড়ালে। একটু পরেই শুনি, বলবর ফিসফিসিয়ে বলছে, “আরে খুল রাহা হ্যায়।” সেকি কান্ড, ব্যাটার কি লুঙ্গি খোলে নাকি? না তো, বসে আছে। কি করে হবে। তখন দেখি, হাকিমের দাড়ি প্রায় এক ইঞ্চি নেমে গেছে। হাকিম উসখুস করছে আর অল্প অল্প নাচছে। তারপর এক সাইড ঝপাস, খুলে বুকের উপর। এবার পাবলিকের কি roar of laughter। একবার করে চেপে লাগায় আর আবার খুলে পড়ে। এর মধ্যে রেগেমেগে সে ওদের বানানো জালি ডায়লগেই ফিরে গেছে – নন্দ সামনে আসতেই এক হাতে দাড়ি চেপে অন্য হাত তুলে “খামোশ” বলে চেঁচিয়ে উঠেছে। অবশ্য তা খেয়াল করার মত অবস্থা দর্শকদের ছিলনা। ষোলকলা পুর্ন হল যখন সে “ধুত্তোর” বলে রংবেরঙের দাড়ি টান মেরে ফেলে নগ্নগন্ডে রোল করতে লাগল। লাইট নিভে গেলেও হাসি আর থামেনা। হাকিম বার বার বলছিল, আমার এই কটা মাত্র ডায়ালগ, তাও হাসির না, এতে লোক হাসাব কি করে। সে দুঃখ ঘুচে গেল।

এর পর আমাদের সবার মরাল খুব দমে গেলেও ঠিক করলাম, বাকিটা অন্তত ঠিক করে নামিয়ে মুখরক্ষা করতে হবে। কিন্তু তাতেও যে ভগবান (কোন দিন বিশ্বাস করিনা বলেই বোধহয়) এমন ব্যাগড়া দেবেন কি করে জানব। পরের সিনে পিসিমা দিব্যি কান্নার ভাব করে যাচ্ছিল, হটাৎ নন্দ দুহাত বাড়িয়ে বলে “পিসিমা, তোমায় ছাড়া আমি বাঁচব না।” খাইসে! এ কেমন প্রেমপুর্ন আকুতি! Gerontophilia নাকি? আবার অডিয়েন্স হেসে লুটোচ্ছে।
লোকজন উৎসাহ দিতে লাগল, প্রেমের দৃশ্যটাই তো আসল ক্লাইম্যাক্স, ঠিক করে নামা, সব ঠিক হয়ে যাবে। ঠিকও হচ্ছিল। আগেই বলেছি, বিরহ-মিলনের গান আর সানাই জুড়ে এই সিনের music track, আর তার সাথে synchronize করে practice করা হয়েছিল। নন্দ প্রথম বার উঠতেই ল্যাপু অপারেটরকে বললাম, নে চালা। কিন্তু সে যে আগের সিনে মিউসিক fade out দিয়েছিল, সেই volume zero রয়ে গেছে। আওয়াজ আর হয়না। অ্যাক্টররা cue না পেয়ে টেবিল থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে পড়েছে। এমন সময় তার হুঁশ হল, volume full করতেই জোরে সানাই। অ্যাক্টররা লাফ দিয়ে চেয়ারে বসে হাত ধরে ফেলেছে দুজনের। দর্শকরা হিন্টটা বুঝেছে, মোটামুটি হাসছে। আমরা বলছি, ওরকমই বসে থাক, লাইট নিভিয়ে একেবারে পরের সিন চালু করে দেব। তখন ল্যাপু অপারেটর, নিজের ভুল বুঝতে পেরে, প্রায়শ্চিত্ত করতে গিয়ে কেঁচেগন্ডুষ। আবার বিরহের গান থেকে চালিয়ে দিল। আমাদের মাথায় বাড়ি, দর্শকদের পেটে খিল।
লাস্ট সিন আর পরিচয়পর্ব কোনরকমে হল, বিশদে জিজ্ঞেস করে লজ্জা দেবেন না। বিদায়ের ডায়লগ বলে দাঁড়িয়ে আছি, লাইট আর নেভেনা। এরকম বার কয়েকই হয়েছিল। কৌশিক ব্যাটাচ্ছেলে excuse দিচ্ছিল শেষে, আমার স্ক্রিপ্ট কে গাপ করে দিয়েছে, লাস্ট ডায়লগ কি তাই জানিনা, সেই মত লাইট নেভাব কি করে। তখন সুযোগ পেয়ে ঝাড় দিয়েছি, আর বলিনি যে ওটা আসলে আমিই নিয়েছিলাম। প্রথম পিসিমা তো তার স্ক্রিপ্ট ঘরে রেখে বাড়ি ভাগল। পরের পিসিমাকে আমার স্ক্রিপ্টটা দিয়ে, কৌশিকের নিজের মাস্টার স্ক্রিপ্টটা ফাঁকতালে নিয়ে নিলাম। আমি ডিরেক্টর, আমার একটা মাস্টার স্ক্রিপ্ট থাকবে না? সবাইকে তো তাদের স্ক্রিপ্ট জেরক্স করে দিতে হল। প্রডিউসার হুওয়া কি কম ঝক্কি! কেউ এক পয়সা ঠেকাবে না। শুধু আর্ট ডিরেক্টর আর্ট পেপার কিনে reimbursement চাইছিল, ঝেঁপে দিয়েছি। ভেবেছিলাম, সবাইকে বলব, চাঁদা দিতে হবে, ক্লাবের মত। পদত্যাগ/মারের ভয়ে মুখ ফুটে বলিনি। জেরক্স-এর সময় প্রত্যেকে যে টুকু অংশে আছে সেটুকু কাঁচি দিয়ে কেটে কেটে দিয়েছি। পরে এসে সবাই ঝামেলা করছিল, পুরো গল্প কোথায়, এটুকু পড়ে feeling আসছে না। ওরে, পুরো গল্প পড়বি, কিছু খসা! তা নয়। শেষে আমাকেই গল্প প্রত্যেকবার মুখে বলতে হয়েছিল।

এরপর “পাগলা রাজা নিজেও প্রজাদের হাত থেকে মুক্তি পেলেন, আর প্রজারাও তাঁর স্বৈরাচারের হাত থেকে মুক্তি পেল।” অর্থাৎ আমি ঠিক করলাম, আর এদের সঙ্গে কাজ নয়; আর এরাও বলল, আর জগু ডাইরেক্টরের সঙ্গে সম্পর্ক নয়। জানলাম যে, পরিচালনা করার ইচ্ছা থাকলে গোচালনাও শিখতে হয়।


এটা কিন্তু গল্প হলেও সত্যি। আমাদের কলেজের নাটক করার অভিজ্ঞতাই লিখলাম (আর সেই জন্যেই এটা ব্লগে লেখার যোগ্য)। যেরকম “চিকিৎসা সঙ্কট” করেছিলাম, তাকে “চিকিৎসা বিভ্রাট” বলাই ভাল (যেটা লোকে ভুল করে প্রায়ই বলত, ফলে যাবে ভাবিনি)। অবশ্য সব নামগুলোই একটু পালটানো, আর লেখাটার first person, জগু, কিন্তু আমি নই। আমি কোনটা? Keep guessing...

P.S.: প্রথম লাইনটা – “বসবার জায়গা আছে” – নেপাল ডাক্তারের বলা প্রথম লাইন।

Sunday, March 23, 2008

Book Fair 2008

The vast ground outside the Quidditch stadium was steeped in a magical orange light. It was dotted with tents of all sizes, and wizards and witches of all ages were going in and coming out of them hurriedly, carrying large bags full of magical items. The whole area looked like a busy honeycomb. Inside the tents, huge shops were set up where people were buying and selling and bargaining over every object of interest. It was organized and managed smoothly by the Ministry of Magic.”

In the above Harry-Potter-ish narrative, do the obvious replacements – replace Quidditch by Football, tents with stalls, wizards and witches by men and women, magical items by books, object of interest by book of interest, Ministry of Magic by Ministry of Sports and Youth Welfare, and you get the summary of Book Fair 2008, 1-10 March.

Just like last year, there was much commotion about where the fair will be held. Let us not get into that discussion here, but at the end, Yuvavarati seems to be a fair choice for fair, temporarily. It indeed is a vast place, with plenty of stalls, so spread that one can not finish in one day if he/she visits all the stalls, giving enough time per stall to skim over all the books. I went there twice – once with family and other time with friends, each time visiting a different section, still failing to see one section.

To be true, the arrangement was good; there were enough of food stalls, with the special attraction ‘mobile-muri’, which is ready-made packed jhaal-muri; many ‘use-me’ bins, pay-n-use toilets, and alert ground-cleaners. Such necessary things are often overlooked, but not this time, which gave the fair a clean look, so that people may sit over the grass and take rest or take a look at their books and belongings.

I do not know why, the ‘Desh’ pavilion was allotted such a huge space where only a little fraction of it was used for displaying books. The ‘Ajkaal’ stall was decorated with interesting stills, and the one my friends liked most is a picture of Sourav Ganguly dressed as a Punjabi to avoid being mobbed during bhashan; but here weren’t even such things. Moreover, the big pavilion ate up walking space and created a bottleneck.

Books were aplenty, and true to the claim of the sports minister, this time there were lesser number of people who come to just have some fun, spend some time and see not book but their Bengali pronunciation. So stalls were more specious, relatively, even during the peak hours, better for bookaholics like me. But I must admit, I am not philanthropic to the book sellers – I just see and enlist books in the book fair, do not buy them – I buy books in College Street where I get double discount. But, there is often rare books brought out of dusty stocks and put on display at book fair, and in such cases, I buy them instantly. I had once a long dreadful waiting time of seven years, when in the childhood I saw ‘Ekei bole Shooting’ in the Boimela, but went to Boipara to discover it has gone out of print. Surprisingly, this time, in one book stall, an old man got compassionate (may be because at that time their stall had no client but only fleas) and gave me double discount, so I bought a lot of books from there.

This time I saw a gamut of new books, not in the sense of published this year, but on the display this time, and got allured by many. Among them are, an excellent collection of four articles on ‘Bangaliyana’ by Narayan Sanyal, an assortment of books on humorous prose & poetry in Bengali, old collections of Deb Sahtiya Kutir (puja magazines in our parents’ childhood) republished, the sensational autobiography of Debabrata Biswas, etc.

I was there on the closing night. The announcer talked in the mic with a heavy voice. The singers in the stall shows bade fairwell. Then the giant bell sounded the ending with repeated gongs. We all clapped to appreciate the fair, the organizers, the publishers and the crowd of book-lovers who make it successful. And while trudging towards the exit gate, I bade goodbye to the fair in my own way, because there is very little probability that for coming five years I will be at Kolkata, not to say of book fair; saying “Jokhon porbe na mor payer chinho ei bate…

Photo Gallery:

En-trance:


Hoarding:



Stadium in the background:


Decorations:


Ananda stall without queues - rare sight:


Stalls:





The bottleneck:



Attraction - mobile-muri:



Clear grounds:



Central decorations:


The book-loving crowd:

Road to departure:


Pic courtesy: Mriganka & Piyas

Saturday, March 15, 2008

A Mori Bangla Bhasha

Note: This text is written in Bengali font. Please install unicode support for East Asian characters if you can not see them properly.

আ মরি বাংলা ভাষা - তোমার বাঁচার নাইকো আশা -
দাদাঠাকুর এই বিধান লিখে গেছিলেন ৫০ বছরেরও আগে, যে রুগির বাঁচার আশা আর নেই; কিন্তু কবে মরবে তা পরিষ্কার করে বলেন নি। আমরাও এখনো বলতে পারছি না, তবে এই আশা রাখি যে যেমন আসুরিক চিকিৎসা চলছে তাতে সেই শুভদিনের বেশি দেরি নেই।
বিশ্বাস করুন, বাংলা থেকে ণ, ষ এসব ব্যঞ্জনবর্ণ, এমনকি ঈ ঊ এসব স্বর যা আমরা আর উচ্চারণ করি না, বাদ দিতে আমার কোন আপত্তি নেই। এতে বাংলা লেখা ও শেখা অনেক সোজা হবে। এবং এ শুধু আমার মত নয়, পাকা মতন প্রমাণ দিয়ে বলছি। বঙ্কিম প্রশ্ন করছেন, পোলাপান কি মায়ের কাছে "মাতঃ, দুগ্ধ প্রদান কর" বলে দুধ চাইবে? মুজতবা আলী তাঁর 'সত্যপীরের কলমে' লিখেছেন - ১১ ভল্যুম ঘেঁটে বার করলুম - আমরা ঞ, ণ, ষ, অন্তস্থ বর্ণ গুলি, দীর্ঘ স্বর ইত্যাদির উচ্চারণ দিয়ে ছাত্র এবং পরলোকগত সংস্কৃত কবিদের আত্মা দুজনকেই কষ্ট দিই। বাংলা অ্যাকাডেমি এখন এই দিকে সদর্থক পদক্ষেপই নিচ্ছেন।

তাহলে এমন কথা বলা কেন? কারন, এই জুন ২০০৪ এ আমরা দেখলাম এক দল লোক, গুন্ডা বলাই শ্রেয়, হাঙ্গামা করছে এই বলে যে বড় বড় দোকানের নাম, বিজ্ঞাপন, পোস্টার বাংলায় চাই।

ভাল কথা। কিন্ত যেগুলো বাংলায় লেখা হচ্ছে, তার যে কি তথৈবচ অবস্থা, তার খোঁজ কেউ রাখে না। সরকার, দোকানদার, জমাদার সবার একই দশা। এইখানে এরকম এক গুচ্ছ উদাহরণ দিচ্ছি।

১। সরকারী নোটিস - রামপুরহাট ট্রেন স্টেশনে:

অগ্রিম হয়েছে আগ্রমি, তাও ই-কার এর টিকি গ এর ঘাড়ে চলে গেছে।

২। এই ৩ টে ছবি বাংলা দূরদর্শন এর খবর এর, তলার news flash থেকে নেওয়া:



বানিজ্য কে বানির্জ্য, খুন কে খূন, মার্কিন কে মর্কিন (মর্টিন লেখেনি তাদের ভাগ্য ভাল) করা হয়েছে। জানিনা, খূন লিখলে গুরুত্ব টা বাড়ে হয়ত, ঊ-কার বলে কথা।

৩। এইবার একটা নমুনা বঙ্গদেশের ভোটরঙ্গ থেকে:

প্রতীক 'প্রতিক' রূপে প্রতিভাত হয়েছে। যদি সর্বত্র ঈ-কার বর্জন করত, তা হলে কোন ঝামেলা ছিল না, কিন্তু আবার 'প্রার্থী' লেখা হয়েছে।

৪। কলকাতার বাস চিরকালই নানা রকম graffiti-র জন্য বিখ্যাত। আর তার মধ্যে ভুল এর ছড়াছড়ি। দুটো উদাহরণ:


'দায়ীত্ব' প্রায়ই দেখা যায়, তাই বোধহয় কেউ বাসে নিজেদের দায়িত্ব নিয়ে সচেতন হননা। এবং সেই দায়িত্বাভাব শুধু নিজেদের মালপত্রের প্রতি নয় - বৃদ্ধ বা অসুস্থকে সিট ছেড়ে দেওয়া, কিংবা ইভটিজিং-এর বিরোধিতা করা - সবেতেই । তবে 'পোকেট' এর এই অবস্থা দেখলে চিন্তিত 'হোইতে'-ই হবে।

৫। একটি ড্রাইভিং শিক্ষামূলক দেওয়াল-লিখন:

এমন খাঁড়া দিয়ে শিক্ষার্থী বলি হয় কিনা, জানতে ইচ্ছা করে। হয় হয়তো, তাই তাদের দিল মাঙ্গে 'মোর'।

৬। এবারে কিছু বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপন না বাংলা ভাষার গনধর্ষণ জানিনা। দেখাই:

যে দোকান এমন 'পোসাক' বেচে তাদের বস্ত্রহরণ করাই উচিত।


ঘড় তো এক রকম আওয়াজ - গলা ঘড় ঘড় করে, আলমারি টানার সময় ঘড় ঘড় করে। সেটা ভাড়া দেওয়া মুশকিল। তাহলে বোধ হয় এই সহৃদয় বিজ্ঞাপনদাতা তাঁর ঘাড়টি ভাড়া দেন।


এই ব্যক্তি নিশ্চয়ই খুব (নাকি খূব) দক্ষ - ইনি দূর থেকেই আভাষ (আভাস) পান যে কারা বিবাহেচ্ছু, তাই তাঁর দূরাভাষ দিতে দূরভাষ (টেলিফোন) নম্বর দিয়ে রেখেছেন। তবে কোয়ার্টার কে 'কোর্য়াটার' লেখায় তাঁকে খুঁজে পেতে ঝামেলা হতে পারে।

আগের গুলো সব ছিল typo। এইবার দেখাই এক মহান শব্দের জাদুকরের কীর্তি:

শৈল, অর্থাৎ পাহাড়ে ঢাকা শহর! আমরা তো জানতাম যে শহর পাহাড়ের উপর, বা কোলে অবস্থান করে, আর বরফ, গাছপালা, ধুলো, কুয়াশা এসবে ঢাকা পড়ে। এবার দেখলাম, পাহাড়েও ঢাকা পড়ে। সত্যি, আমাদের ভূগোল জ্ঞান কত কম!

৭। শেষ করি বইমেলা ২০০৮ এর এক দোকানের বিশাল অক্ষরে লেখা বই এর লিস্ট দিয়ে:

কোন কালী-দাস এর কথা বলছে - রামপ্রসাদ, কমলাকান্ত না রামকৃষ্ণ? সঞ্চয়িতা হয়েছে সষ্ণয়িতা। শ্রীমদ্‌ কে কেটে শ্রী আর মদ (আহা কি আনন্দ) আলাদা করা হয়েছে, তারপর সেই মদ ভগবদ-র সঙ্গে জুড়ে ভক্তিতে গদগদ হয়েছে। সাধে কি আর ধর্মকে নেশার সঙ্গে তুলনা করা হয়।

তাহলে দেখা যাচ্ছে, রোগের লক্ষণ গুরুতর। কিন্তু প্রশ্ন হল, বাংলা ভাষা যে মারা যাবে, তারপর বাংলার লোক কি ভাষায় কথা বলবে? বোবা হয়ে তো থাকবে না। উত্তর হল, বঙ্গভাষা প্রেতরূপ প্রাপ্ত হয়ে বংভাষা হবে। তার শব্দভান্ডার তৈরি হবে ঝাক্কাস, বিন্দাস বা funky, hottie নিয়ে। এরা অজ মানে তো জানবেই না, bovine মানে ও জানবে না। ভাবছেন, তাও কি হতে পারে? এত ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল গজাচ্ছে চারিদিকে, তার ফল যাবে কোথায়? তাহলে দেখুন:

১। আবার শুরু করি সরকারী দলিল দিয়ে:

CESC (ক্যালকাটা ইলেকট্রিক সাপ্লাই)-র website এ consumer কে cosumer করে consummate দক্ষতা দেখানো হয়েছে।

২। মোবাইল এর রমরমার যুগে কোনো পাপে top-up 'topap' হয়েছে :


৩। ইনি অত্যন্ত দক্ষ চিত্রশিক্ষক হতে পারেন কিন্তু portrait কে potrate লিখলে থিয়োরী-তে নম্বর কাটা যাবার সম্ভাবনা:



অনেক কষ্ট করে ক্যালকাটা কে কলকাতা করা হল। কিন্তু অবাঙ্গালীরা যখন কোওল্‌কাতা বলেন, তখন মনে হয়, যে এর থেকে কল্‌কত্তা-ই ভালো ছিলো।

আপাতত এই দিয়ে বাঙ্গালা ভাষার স্মৃতিতর্পণ করলাম। সবাই মিলে গান:
"মোদের গরব মোদের আশা
আ মরি বং-এর ভাষা।"

(ছবি দিয়ে সাহায্য করেছে মৃগাঙ্ক ও চন্দন)